স্বাধীনতার অর্ধশতক পরে দেশে আজ যে সাংস্কৃতিক বিপর্যয় দেখলাম, চারদিকে মৌলবাদী হায়েনার অট্টহাসির যে বিকার দেখলাম তা পাকিস্তান পর্বেও দেখিনি। বর্তমান পৃথিবীটা চিন্তা আর চেতনায় অনেক উচ্চমার্গে চলে গেছে আর আমার দেশের যুবসমাজ ‘মঙ্গল’ শব্দটি হিন্দু না মুসলিম এই নিয়ে বিতর্ক করে। এমন পতন আর মানসিক অবক্ষয় বাঙালির যা কল্পনা করিনি। যা আমাকে খুব পীড়া দেয়। তবু আশা, আগামী দিনের প্রজন্ম একাত্তরের অমিত সেøাগান ‘জয় বাংলা’ বুকে ধ্বনিত করবে, আজান ধ্বনিত হবে, মধ্যরাতে হাড়িয়ারাঐ গ্রামের অশ্বিনী কাকার মতো আকুল কণ্ঠে নামসংকীর্তন গাইবে কীর্তনীয়ারা, তাজিয়া মিছিল বের হবে মহররমে, মর্সিয়া গাইবে ‘হায় হোসেন হায় হোসেন’ যুবকের দল, সনাতনিদের দুর্গাপূজায় পুলিশ প্রহরা লাগবে না, ইদে মিলাদুন্নবিকে কেউ ফতোয়া দেবার সাহস করবে না বিদাত বলে, আহমদিয়াদের কেউ অমুসলমান ঘোষণা করার অন্যায় আবদার করতে পারবে না, আবার ধর্ম হবে আধ্যাত্মিক উন্নতির সোপান কেবল। গৃহত্যাগী বাউল চারণের দল বোষ্টম-বোষ্টমিরা গান গেয়ে বেড়াবে, এই দেশ কোনও ‘ধর্মগোষ্ঠীর’ এই কথা হবে রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল–একাত্তরের একজন সৈনিক হিসেবে বুকে এই স্বপ্ন নিয়েই বাঁচতে চাই।