একদিকে সৃষ্টি, অপরদিকে কর্ম এবং সবকিছু ছাপিয়ে মানুষ ও মনীষা- রবীন্দ্র-মূল্যায়নের ধারায় সিলেট-মনীষার শতাধিক বছরের উজ্জ্বলতম অনুধ্যানের স্মারক শ্রীভূমির রবীন্দ্রনাথ। গ্রন্থটিতে ঠাঁই পেয়েছে ৩৯ জন লেখকের ৪২টি প্রবন্ধ ও নিরুদ্ধ এবং একটি অভিভাষণ। লেখকদের মধ্যে সতীশচন্দ্র রায় থেকে আবুল মাল আবদুল মুহিত সকলেই শ্রীভূমি সিলেটের সারস্বত-সমাজের প্রতিনিধি, সাহিত্যামোদী, গবেষক ও চিন্তক। বিষয়ানুযায়ী ‘পাঠ: ভ্রমি বিস্ময়ে’, ‘ব্যক্তি থেকে বিশ্বে’, ‘শ্রীভূমি ও রবীন্দ্রনাথ’ এবং ‘স্মৃতি ও স্মরণ’- এই চারভাগে বিভক্ত রচনাগুলোতে স্রষ্টা, কর্মী ও ব্যক্তি-রবীন্দ্রনাথকে মূল্যায়ন করা হয়েছে বক্তব্য, স্মৃতি, স্মরণ ও গবেষণাসূত্রে; বৌদ্ধিক- এষণায়। এছাড়াও প্রবেশক ও পরিশিষ্ট-অংশে
সংযোজিত হয়েছে যথাক্রমে ‘সিলেটে রবীন্দ্রচর্চা’ ও ‘সিলেটে রবীন্দ্রচর্চা: লেখকসূচি’-শীর্ষক গবেষণাধর্মী দুটি মূল্যবান রচনা। এ-সব মিলে গ্রন্থটিকে রবীন্দ্রচর্চার অসামান্য কীর্তি হিসেবে হাজির করেছেন সম্পাদক, কবি ও গবেষক জফির সেতু।
একদা বাংলার রাষ্ট্রসীমা থেকে নির্বাসিত হলেও শ্রীভূমি কখনওই রবীন্দ্রনাথ থেকে বিচ্যুত- বিচ্ছিন্ন হয়নি। বরং বরাবরই তিনি ছিলেন এতদঞ্চলের মানুষের আত্মিক শরণ; অস্তিত্বের সংগ্রাম ও আত্মপরিচয় নির্মাণে অমোঘ শক্তি। শ্রীভূমির রবীন্দ্রনাথ এরই বহুস্বরীয় ঘোষণা।