আকস্মিক আয়োজনে দেশের প্রাচীনতম চা-বাগানের কোম্পানির বাংলোয় এক সন্ধ্যায় উপস্থিত কিছু নারী-পুরুষ। কারণ, রাজধানী থেকে সস্ত্রীক এসেছেন এক খ্যাতনামা সাহিত্যিক, যিনি একইসঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। সান্ধ্য আড্ডার আয়োজক তার স্থানীয় বন্ধু। এ শহরের মান্য নাগরিক তিনি।
সেখানে লোকসংগীত শোনান এক বিশিষ্ট গায়িকা, ব্যক্তিগত কারণে নাগরিক মঞ্চ প্রায়শ এড়িয়ে চলেন তিনি। রাধারমণ, শাহ আবদুল করিম, লালন আর দুর্বিন শাহ রচিত গান এবং তার গায়কির আবেশে সবাই ধীরে ধীরে নিজের ভিতরে বাইরে বদলে যেতে থাকে। মাঝখানে রবীন্দ্রসংগীত গান অন্য এক নারী, যিনি বিশিষ্ট সাহিত্যিকের মানসসঙ্গিনী। রবীন্দ্রনাথের প্রেম ও বিরহের বাণীতে শ্রোতারা নিজের কাছেও ফেরে। ওদিকে তারা দুজন পরস্পরকে সে গানে বারতা পাঠায়।
এ সময়ে উপস্থিত কাহিনির প্রায় বিবরবাসী কথকের মনে হয়, মানুষের মনে শূন্যতার বোধ সৃষ্টি হলে যেন সে নিজেকে উজাড় করে। নয়তো সবাই বন্দি থাকে নিজের ঘেরাটোপে। এই নির্জন প্রকৃতি উসকে দিয়েছে উপলব্ধির চেতন। পুরোনো কথা আবার মনে হয় তার—প্রকৃতির মাঝেই লুকিয়ে থাকে স্মৃতি!
সেই নির্জন মগ্নতার ধারে কয়েকজন খোলসমুক্ত নিঃসঙ্গ মানুষকে ঝরঝরে গদ্যে মুখোমুখি করেছেন প্রশান্ত মৃধা।