দৃশ্যের ভেতরেও দৃশ্যান্তরিত হওয়া আর প্রকৃতির মাতৃকুল পিতৃকুল থেকে আহরিত জিজ্ঞাসার অন্তর্নিহনে আরোহণ করে নিরন্তর সদুত্তর খুঁজতে খুঁজতেই লিখিত হয় কিছু কথা, কথার ছায়া। শব্দে মাত্রিক-নির্মাত্রিক গঠন ও আকৃতি। এভাবেই মালেকুল হক জলের শূন্য, বাতাসের রঙে চিন্তার প্রজ্ঞাপন ঝুলিয়ে রাখছেন, গ্রহের আলোয় আলোয়, শিশিরের বিন্দুকণার আসন্ন অস্ফুটিত ভ্রূণে। কথার আলো দীর্ঘ হয় আপন নিয়মে। ভূর্জপত্রে লিখিত হয় মহাকালের শুশ্রুষা-তাবিজ। চিন্তনের প্রকাশিত পাখিগুলো হাইকু হয়ে ডানা ঝাঁপটায় হিরোশিমার আকাশে আর মহাশূন্যের আলোকরশ্মির কণার ভেতর। মালেকুল হক কবিতা লিখছেন, চিন্তার ছানা তৈরি এই অমৃত জীবনের নির্যাস। কাল ও শিল্পোত্তীর্ণতার আরোপিত ইচ্ছেয় কবির বিন্দুমাত্র ভ্রূক্ষেপ নেই। শ্রম, ঘাম ও আয়ুর নৈঃশব্দ্য নিঃসরণ এই হাইকু- পৃথিবীর পৃষ্ঠে লিখে রাখা এক নতুন কাব্যচিন্তন। সময়কে সাহিত্যে রাখতে অনন্ত প্রতিটি শিশিরকণায় তাকে প্রতিস্থাপন করেছেন- বাবুইপাখির মতো নিরবচ্ছিন্ন ধ্যানে নিরন্তর সাধনায়। ধূসর পৃথিবী ও প্রকৃতির স্বেচ্ছাশ্রমের বাতিওয়ালা একজন কবি আর তাঁর রচিত প্রতিটি হাইকু নক্ষত্রের আচমকা আবিষ্কৃত আলোর ম্রিয়মাণ আত্মপ্রকাশ। দিব্যোম্মাদ আয়নার হাইকুগুলো যেন ছোটো ছোটো একেকটি দিনির্দেশনার বাতিঘর।