পাঠকের মনে পড়ে, সে তখন সবে কলেজের চৌকাঠ ডিঙিয়ে পা রেখেছে নিজবৃত্তে। বন্ধু মন্ত্রণা দিল, ‘ইহাদেরি কানে’ কবিতাটি পড়ে দেখ। তখন আমাদের পাঠক ভুগছে বয়সোচিত হৃদয়বৃত্তির নানা রোগে-শোকে, অসুস্থতায়। দৃষ্টির ওপরেও পড়তে শুরু করছে কালশিটে। প্রথম পাঠেই, কবিতাটি যাকে বলে, নোঙর তুলে, দড়িদড়া হালকাছিপালসুদ্ধ ভাসিয়ে নিয়ে গেল তাকে। একেই বুঝি-বা বলে, বয়সের ধর্ম। মাঝ গাঙে পৌঁছে গেল নাও, কিন্তু বায়ুহীন রোদ্দুরের গুমোট চেপে রইল বুকে। স্রোত হয়তো মিশে ছিল কবিতাটির দেহে, তবে সে বড় মিইয়ে-আসা স্রোত। টেনে নিয়ে ছেড়ে দেয়ার, যাকে বলতে পারা যায়, মুক্তি দেয়ার মতো টান ছিল না সেখানে। অযাচিত ভার চেপে রইল পাঠকের হাড়-পাঁজরায়। ঘোর কাটতে হয়তো সময় লাগে। ঘোর তো আর কালঘুম নয়। সময় লেগেছে এই পাঠকের ক্ষেত্রেও। কিছু স্মৃতি, কিছু অনধ্যান, কিছু পাঠ অভিজ্ঞান সমবেদনার হাত বাড়িয়েছে, বিমূঢ়-নিশ্চল পাঠকের প্রতি। যেহেতু প্রতিটি কবিতা পাঠই এক-একটি নববিশ্বজন্মের অভিষেক তোড়ফোঁড় ছুঁয়ে উঠে আসে জলের পাহাড়। প্রশ্ন, প্রশ্ন রাখে নিজের কাছেই। উত্তর সে নিজেই ধারণ করে আপন অন্তরে